চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান বলেন, শহীদ জিয়া বাংলাদেশে উৎপাদনমুখী অর্থনীতির ভিত্তি স্থাপন করেন। গ্রামীণ উন্নয়ন, কৃষি বিপ্লব, যুবকল্যাণ, শিল্পায়ন—এই সবক্ষেত্রে তার নেওয়া যুগোপযোগী পদক্ষেপ আজও স্মরণীয়। তিনি চেয়েছিলেন একটি আত্মনির্ভরশীল, প্রগতিশীল এবং আধুনিক বাংলাদেশ—যেখানে প্রত্যেক নাগরিক নিজের মর্যাদা নিয়ে বাঁচবে, উন্নয়নে অংশ নেবে। তার শাসনামলে দেশের মানুষ প্রথম বুঝেছিল—রাষ্ট্র কেবল শাসন নয়, সেবা দানেরও একটি প্রতিষ্ঠান।
আজ শনিবার (৩১ মে) মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম-এর ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে নগরীর পাথরঘাটা ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত হয় সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের মাঝে বিশেষ খাবার বিতরণ কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
নাজিমুর রহমান বলেন, ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার—এই মন্ত্রে বিশ্বাসী শহীদ জিয়াউর রহমান ছিলেন এক অসাম্প্রদায়িক, মানবিক রাষ্ট্রনায়ক। তার রাষ্ট্রদর্শনে সব ধর্ম, সব সম্প্রদায়ের মানুষের সমান অধিকার ও মর্যাদা ছিল সংরক্ষিত। তার শাসনামলে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ছিল নিশ্চিত, এবং রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রতিটি ধর্মীয় উৎসবকে সম্মানের সঙ্গে উদযাপনের পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়েছিল। আজকের এই কর্মসূচিতে সনাতনী ধর্মাবলম্বী ভাইদের মাঝে খাবার বিতরণের মাধ্যমে আমরা তার অসাম্প্রদায়িক আদর্শ ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিরই বাস্তব প্রতিফলন ঘটিয়েছি। দেশের বর্তমান সংকটময় সময়ে শহীদ জিয়ার এই উদার, ধর্মনিরপেক্ষ ও জনমানুষনির্ভর দর্শন আমাদের রাজনৈতিক ও নৈতিক পথপ্রদর্শক হয়ে উঠেছে।
তিনি আরও বলেন, জাতীয়তাবাদের মহানায়ক শহীদ জিয়াউর রহমান কেবল একজন রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা, একজন সশস্ত্র বিপ্লবী এবং এক দুরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক, যিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে অল্প সময়ে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম করেছিলেন। ১৯৭১ সালে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে তিনি যেভাবে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন, তা ছিল ইতিহাসের এক অমর অধ্যায়। শুধু যুদ্ধজয়ের নায়কই নয়, তিনি ছিলেন পুনর্গঠনের স্থপতিও। রাষ্ট্রের কাঠামো নতুনভাবে সাজিয়ে তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন এবং জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণমূলক রাজনীতি চালু করেন।
তিনি বলেন, আজ যখন দেশে গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত, মানুষের মৌলিক অধিকার হুমকির মুখে, তখন শহীদ জিয়াউর রহমানের দর্শন ও আদর্শ আমাদের একমাত্র আশ্রয়। তরুণ প্রজন্মকে তার ইতিহাস জানাতে হবে। তার দেখানো পথেই আমরা এই দেশে স্বাধীনতা, মর্যাদা ও উন্নয়নের সুবাতাস ফিরিয়ে আনতে পারবো। শহীদ জিয়া আজ নেই, কিন্তু তার আদর্শ বেঁচে আছে আমাদের হৃদয়ে, আমাদের আন্দোলনে, আমাদের চেতনায়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য ইসমাইল বালি। আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুর রহমান স্বপন, হারুন জামান ও মনজুরুল আলম মঞ্জু। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে অংশ নেন মহানগর বিএনপির সদস্য খুরশিদ আলম, কোতোয়ালি থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মনজুর রহমান চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন এবং ফিরিঙ্গি বাজার ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি আক্তার খান
আলোচনা শেষে শহীদ রাষ্ট্রপতির আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয় এবং সনাতনী ধর্মাবলম্বীরা নিজ নিজ ধর্মীয় রীতিতে প্রার্থনায় অংশ নেন। আয়োজকরা জানান, শহীদ জিয়ার আদর্শ অনুসরণ করে ভবিষ্যতেও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।